শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
শম্পা দাস ও সমরেশ রায়,কলকাতা:
১লা ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার, পশ্চিম মেদনীপুর জেলার গড়বেতা ব্লকের অন্তগত ,মেটাডহর গ্রামের মেয়ে তারজুনা। ছোটবেলা থেকেই নেশা ছিল ফুটবলের উপর, তাই ছোটবেলায় ফুটবল খেলতে গিয়ে ধানসিদ্ধ উনুনের আগুনে ঝাঁপ দিয়ে পুড়ে গিয়েছিল সারা শরীর, কোনভাবে নিজেই বাইরে বেরিয়ে আসে, কাকুর সাথে খেলতে গিয়ে হঠাৎ করে এই দুর্ঘটনা ঘটে যায়, এতটাই ছিল সে ফুটবল প্রেমী, তাই বলটি কুড়াতে গিয়ে এই বিপত্তি, আগুনে পুড়ে গিয়েও বলটি কিন্তু ছাড়েননি, এদিকে এলাকার মুরুব্বীরা তার জন্য আর উপর চাপ দিতে থাকে, এমনকি হুমকিও দিতে থাকে, বলেন মুসলিম সমাজে মেয়েদের হাফ প্যান্ট পড়ে বেরোনো ঠিক নয়, শুধু তাই নয় তারা বলেন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হাফপ্যান্ট পড়ে যায় কোন কিছু ঘটে গেলে আমরা দায়ী হবো না কিন্তু তারজুনা ছিল একটু জেদী, বাবা-মা ভয় পেলেও, কারো কথায় সে কর্ণপাত করেননি, দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের মেয়ে তার জুনা, মা সাকিনা বিবি গৃহবধূ, বাবা তৈমুর আলী দিনমজুর, ছাত্র অবস্থায় ডিগ্রি স্যানেটরিয়াম উচ্চ বিদ্যালয় পড়াশুনা করার সময় প্রথমে ছেলেদের সাথেই ফুটবল খেলতে শুরু করে তারজুনা, তার খেলারই আগ্রহ দেখে খেলার শিক্ষক হিমাদ্রী মন্ডল মেয়েদের নিয়ে একটি ফুটবল টিম গঠন করে, সেখানে ভালো খেলার পর, সালবনী জাগরণের হয়ে ফুটবল খেলে তারজুনা, শালবনীতে খেলতে খেলতে তার ডাক আসে কেশিয়াড়ি থেকে ফুটবল খেলার জন্য, এখান থেকে সে জেলাস্তর, রাজ্যস্তর ও জাতীয় স্তরের ফুটবল খেলে খেতাব অর্জন করে গড়বেতার তারজুনা। খেলার উপর এসেছে একাধিক মেডেল, ট্রফি ও সার্টিফিকেট, কিন্তু এখানেও তার শেষ নাই, খেলার তাগিদে বাইরে চলে যাওয়ায়, চুরি করে নেয় দুষ্কৃতীরা তার মেডেল ও সার্টিফিকেট।এরপর তারজুনা বেশ কয়েকটি রাজ্যস্তরের ফুটবল খেলা পরিচালনা করে পরবর্তীতে একটু একটু করে আই এফ এ
একজন সুদক্ষ মহিলা রেফারী হিসেবে নাম করেছে, বেশ কয়েকটি খেলা ও পরিচালনা করে তারজুনা। ভবিষ্যতে তিনি ফুটবলকেই বেছে নিয়েছেন তার জীবনসঙ্গী হিসাবে, ফুটবলই তার জীবন, তিনি জানান আগামী দিনে মহিলা ফুটবল খেলোয়াড়দের পথ-প্রদর্শক হতে চায়, তাহার মা জানান, তারজুনাকে অনেক কটু কথা শুনতে হয়েছে গ্রামের মোড়লদের কাছ থেকে।
আমরাও ওর পাশে দাঁড়াতে পারিনি, ওকে অনেক কষ্ট দিয়েছি ,তবে ওর কঠিন যেদের কাছে হার মানতে হয়েছে আমাদের, আজকের সাফল্যে সত্যি আমরা খুব গর্বিত আনন্দিত। তারজুনার মা বললেন ও ফুটবল নিয়েই এগিয়ে চলুক। তারজুনার এই সাফল্যে খুশি শিক্ষক হিমাদ্রী মন্ডল সহ ডিগ্রী স্যানোটেরিয়াম উচ্চ বিদ্যালয় সকল শিক্ষক শিক্ষিকারাও।